Review
শেষ মৃত পাখি
সুপ্রকাশ
মূল্য ₹৫২০
শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য
পঁয়তাল্লিশ বছর আগে দার্জিলিঙের এক সম্ভাবনাময় কবি, অমিতাভ মিত্র খুন হয়েছিলেন। অভিযোগের তীর ছিল তাঁরই ঘনিষ্ঠ বন্ধু রহস্য-ঔপন্যাসিক অরুণ চৌধুরীর দিকে। কিন্তু নানা পরস্পর বিরোধী প্রমাণে সে অভিযোগ দাঁড়ায়নি।
তনয়া একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক। অমীমাংসিত খুনের কাহিনী নিয়ে ধারাবাহিক লিখছেন পত্রিকায়। অমিতাভ মিত্রের হত্যা-রহস্য নিয়ে লেখার জন্য দার্জিলিঙে এলেন তনয়া। তারপর? তনয়া কি খুঁজে পেলেন এই হত্যারহস্যের সমাধান?
জাপানের হনকাকু ঘরানার থ্রিলার নিয়ে আলোচনা করতে করতে এই উপন্যাসের একটি চরিত্র আরেক চরিত্রকে কথাচ্ছলে বলেন ".... সাহিত্য না থাকলে শুধু শুকনো মগজের খেলা কতক্ষণ ভালো লাগে মানুষের??"
আর ঠিক এই জায়গাতেই"শেষ মৃত পাখি" অন্য সমস্ত থ্রিলার থেকে সম্পূর্ণরূপে আলাদা।
সত্তরের দশকের এক সম্ভাবনাময় কবির হত্যারহস্য নিয়ে তদন্ত করতে উনপঞ্চাশ বছর পর দার্জিলিং এ আসেন এক সাংবাদিক। তনয়ার নিজের ভাষায় তিনি সমাধান খুঁজছেন না, তিনি খুঁজছেন একটি স্টোরি। এবং তার এই স্টোরি খোঁজার সূত্রে তিনি একটি নয় পেয়ে যান দু-দুটো গল্প, দু দুটো আনসলভড মিস্ট্রি। একটি গল্পে রয়েছেন অমিতাভ মিত্র, অরুণ চৌধুরী, ড্যানিয়েল লামা, ধনরাজ গম্বু প্রভৃতি চরিত্র, আর একটি গল্পে রয়েছেন শুদ্ধসত্ত্ব, প্রণবেশ, মাধব রক্ষিত, আনিসুর, বিমলবাবু। এ এক গল্পের মধ্যে আরেক গল্প। একটি গল্পের রহস্য সমাধান আরেকটি গল্প ছাড়া সম্ভব নয়। পড়তে পড়তে কখনো মনে হতে পারে অ্যান্থনি হরওয়িজ এর ম্যাগপাই মার্ডারস পড়ছেন, সেই গল্পের মধ্যে গল্প, কিন্তু বিশ্বাস করুন বইয়ের শেষে বুঝতে পারবেন "শেষ মৃত পাখি" সম্পূর্ন আলাদা এবং ব্যক্তিগত ভাবে ম্যাগপাই মার্ডারস এর থেকে অনেক অনেক ভালো একটি বই। কারণ এই দুই গল্পের মাঝে আছে উত্তাল সত্তর, তার লিটল ম্যাগাজিন, তার বীতশোক ভট্টাচার্য, অমিয়ভূষণ মজুমদার, নিশীথ ভড়, তুষার, এবং তার নকশাল আন্দোলন। সত্তর দশক ছাড়াও এই গল্পের আরেক প্রধান চরিত্র বর্ষার দার্জিলিং, যে দার্জিলিংয়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখক ম্যাজিক রিয়ালিজম এর আশ্রয় নিয়েছেন। পাহাড়ের ধারে সেই কালো ঘোড়া বহুদিন মনে থাকবে।
আর এই গল্পের মিষ্ট্রি বা সাসপেন্স এলিমেন্ট, শেষ দশ পাতা আগেও ধরতে পারবেন না কি হচ্ছে। ওই যে দুটো ইন্টার ডিপেন্ডেনট রহস্য আর তার সাথে থ্রি লেয়ার্ড সমাধান।
৪০০ পাতার একটি থ্রিলার উপন্যাস শেষ কবে বাংলায় বেরিয়েছে আমার মনে নেই, কিন্তু থ্রিল এবং সাহিত্যের এই মিশেল, দু দিনে এই বই শেষ করতে বাধ্য করেছে। এই বছর, এই দশক এবং এই শতকের সেরা থ্রিলার।
রিভিউটি লিখেছনঃ সমীরণ দাস
review
বই - শেষ মৃত পাখি
লেখক - শাক্যজিত ভট্টাচার্য
এই উপন্যাস সম্পর্কে কি বলি... শুধুই মুগ্ধতা... গোগ্রাসে গিলেছি সব টা.. দীর্ঘ 401 পাতার বই.. লেখক শেষ পর্যন্ত টান টান উত্তেজনা ধরে রেখেছেন.. গল্প লেখার ধরণ টাও বেশ সুন্দর.. নেট থেকে টুকে এক গাদা ইনফরমেশন নেই তার বদলে অপরাধের জটিল মনস্তত যা পেঁয়াজ এর খোসার মত প্রতি স্তরে চমক দেবে... বহু বছর আগে হওয়া এক উঠতি কবির মৃত্যু.. তার দায় এসে পড়ে তার এ বন্ধু অরুণ চৌধুরীর উপর... সাংবাদিক তনয়া তার স্টোরি কভার করতে আসেন... সেই নিয়ে গল্প এগোবে.. এছাড়া এ বই নিয়ে যাবে 70's এর লিটল ম্যাগাজিন এর উত্থান... নতুন কবি থেকে হনকাকু.. কবিতার এত গভীর অর্থ এর আগে উপলব্ধি করিনি... খুব মন দিয়ে পড়েছি.. কিছু মিস করছি না তো.... দার্জিলিং, পাহাড়, বর্ষা ভেজা পথ, এফিটাফ.. গরম কফি.. প্রতি মুহূর্তে নস্টালজিক করে তুলবে...সাথে এই জমজমাট থ্রিলার... আমি বহু দিন পর এত ভালো থ্রিলার পড়লাম.. যারা ভালোবাসেন অবশ্যই পড়ুন..
PS :প্রচুর বই পড়ি.. কিন্তু রিভিউ লেখা হয়নি... খুব একটা ভালো পারিনা লিখতে ... আজ মনে হলো.. এ বই অনেকের পড়া উচিত যারা আমার মত থ্রিলার ভালোবাসে...
রিভিউটি লিখেছনঃ মৌসুমী দত্ত
review
বই - শেষ মৃত পাখি
লেখক - শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য
পঁয়তাল্লিশ বছর আগে দার্জিলিঙের এক সম্ভাবনাময় কবি, অমিতাভ মিত্র খুন হয়েছিলেন॥ অভিযোগের তীর ছিল তাঁরই ঘনিষ্ঠ বন্ধু রহস্য-ঔপন্যাসিক অরুণ চৌধুরীর দিকে ॥ কিন্তু নানা পরস্পর বিরোধী প্রমাণে সে অভিযোগ দাঁড়ায় নি। তনয়া একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক ॥ অমীমাংসিত খুনের কাহিনী নিয়ে ধারাবাহিক লিখছেন পত্রিকায় ॥ অমিতাভ মিত্রের হত্যা রহস্য নিয়ে লেখার জন্য দার্জিলিঙে আসে তনয়া।
তনয়া এতবছর আগের সেই রহস্যের সমাধান করতে গিয়ে খুঁজে পায় আরও অসংখ্য রহস্য।
এক রহস্যের সমাধান করতে করতে রক্তবীজের মতো তৈরি হতে থাকে একের পর একেক নানান রহস্য?? শেষ পর্যন্ত কি হলো জানতে হলে পরতেই হবে এই উপন্যাসটি।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Anamika
আপনিও লিখতে পারেন রিভিউ। বিস্তারিত দেখুন এখানে।