অদ্ভুত আধাঁর এক
মনোয়ারুল ইসলাম
ওপাড় বাংলার বইয়ের ব্যাপারে সবচেয়ে যেটা মন টানে, তা হল বইয়ের বৈচিত্র। একই সাথে একই সময়ে ওখানে এত রকমের বই লেখা হয় যা দেখলে এটা খুব স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে আমাদের এপাড় বাংলার লেখালিখি যে আস্তে আস্তে গড্ডালিকা প্রবাহের দিকে এগোচ্ছে। জঁর সাহিত্যে রহস্য, রোমাঞ্চ, ভূত, ভয়, গোয়েন্দা চিরকালই ছিল, আছে এবং থাকবে। কিন্তু বর্তমান সময়ে রক্ত-মাংস ও তন্ত্র-মন্ত্র যে ভাবে বাজার দখল করছে, সেখানে জঁর এর বাকি শাখাগুলো ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। অজানা অচেনা ভয়ের গল্প, যেমন লাভক্রাফটিয়ান হরর সেরকমই একটি না-ছোঁয়া মাটি। সেই রকমই একটি গল্প 'অদ্ভুত আধাঁর এক'।
একটি গ্রামে এসে বাড়ি ভাড়া নিয়ে ওঠেন এক সরকারি অফিসার ও তাঁর স্ত্রী। বাড়ির লাগোয়া পুকুরে কোনো মাছ না থাকলে মাঝে মাঝেই কী যেন ঘাই মেরে ওঠে। আর সেই গ্রামের একটি অদ্ভুত বিকলাঙ্গ ছেলে সারা রাত রাস্তা ঘষে ঘষে ঘুরে বেড়ায় সারা গ্রাম। এমনই তার চেহারা যে দেখলে লোকে অজ্ঞান অব্দি হয়ে যায়। কেউ জানে না ছেলেটির আসল বাবা কে বা কী? কারণ তার মানুষ পিতা প্রথম বার তাকে জন্মের পর হাতে নিয়েই ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বলে ওঠে, ‘এ মানুষের বাচ্চা নয়!’ এবং নিখোঁজ হয়ে যায়। কোন্ রহস্য লুকিয়ে আছে গ্রামের এক কোনার জঙ্গলে, কেন সেখানে কেউ যায় না, কোন্ অপার্থিব সত্ত্বা দানা বেঁধেছে এই গ্রামে?
প্রশ্ন ছিল অনেক কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব কিছুই বাকি রয়ে গেল। কামুক প্রতিবেশীনি, একাধিক নিখোঁজ মানুষ, দরমার ফুটোয় অসভ্য চোখ এবং ভয়ংকরের বর্ণনা - সব ক্ষেত্রেই এই বইতে 'এক জোড়া চোখ খোঁজে আর এক জোড়া চোখকে' বইয়ের ছায়া অস্বীকার করার উপায় নেই। বইয়ের শেষে বাকি রয়ে যাওয়া প্রশ্নগুলি যথেষ্ট বিরক্তিকর। কিন্তু লেখার বাঁধুনি এই বইকে হাত থেকে নামিয়ে রাখতে দেয় না। এ বই সফল না হলেও এরকম বৈচিত্রময় লেখা ও সেই লেখা পড়া আজকের দিনে খুবই দরকার। তাই মনে ক্ষোভ থাকলেও ...
রেটিং ৬/১০
রিভিউটি লিখেছেনঃ
আপনিও লিখতে পারেন রিভিউ। বিস্তারিত দেখুন এখানে।