বই - ব্লু ফ্লাওয়ার ; খন্ড - ১,২,৩ এবং ৪
লেখক - অভীক দত্ত
আমার রেটিং - ৮/১০
জেমস বন্ড পড়তে কি ভালো লাগে? স্পাই থ্রিলার ?? তাহলে এই সিরিজটা পড়তে পারেন। মোট ৪ টি খন্ড, ক্রমানুসারে পড়ুন। অতিরঞ্জিত বলিউড সিনেমার গল্প নয়, বরং অনেকটাই বাস্তব থেকে উঠে আসা গল্প। চরিত্রগুলিও আমাদের আশেপাশের লোকজন। কিভাবে একটি অতি সাধারণ ছেলে জড়িয়ে পড়ে এক বড় চক্রান্তে, নিজের অজান্তেই হয়ে যায় শক্তিশালী খেলোয়াড়দের হাতের পুতুল। কিভাবে সে ঢুকে পড়ে দেশের গোয়েন্দা বাহিনীতে, যে নাম দিয়ে শুরু করেছিল এই জগতে যাত্রা, সেই নামের আসল লোকের সাথেও মুখোমুখি হয় একদিন, কি হয় তারপর ?? ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের বাস্তব পরিস্থিতি নিয়ে গল্প এগিয়ে চলে। পরিবারের সবথেকে শান্ত ব্যক্তিকে যদি হঠাৎ জানা যায় একটি জঙ্গী গোষ্ঠীর অন্যতম শীর্ষ নেতা, কি হয় তারপর সেই পরিবারের সদস্যদের। Raw এবং ISI এর সাপে নেউলের যুদ্ধ, শত্রুদের দেশে প্রাণ হাতে করে লুকিয়ে থেকে মাতৃভূমিতে বড় নাশকতা রোধ করা, আবার শত্রুদেশে মনের মানুষকে খুঁজে পাওয়া, না বলিউডের মতো দুজনই স্পাই, তেমন নয়। অত্যন্ত রুদ্ধশ্বাস এবং উপভোগ্য লেখা একদমে শেষ করে ফেললাম এই উইকএন্ডে।
লেখাটা পুরো সাবলীল বলতে পারলাম না একটা ছোট্ট বিষয়ের জন্য - কথোকথন এর সময়
সায়ক বলল -
বীরেন বলল -
সায়ক বলল -
এই বারবার "বলল", আর "বললেন" টা এড়িয়ে যাওয়া যেত, এত ভালো উপন্যাসটি এইজন্য প্রতিটি কথোকথনের সময় বিরক্তিকর লাগছিল।
এই অংশটা বাদ দিলে উপন্যাসটি সত্যিই সুখপাঠ্য।
রিভিউটি লিখেছেনঃ
আপনিও লিখতে পারেন রিভিউ। বিস্তারিত দেখুন এখানে।
বই: ব্লু ফ্লাওয়ার (১)
লেখক: অভীক দত্ত
Review একটু বড় হয়েছে
গল্পটি শুরু হয় বীরেন নামে একটি ছেলেকে দিয়ে যে ছেলেটি এটিএমে একটি ছেলেকে অবৈধভাবে অনেক কার্ড ব্যবহার করে টাকা তুলতে দেখে।
জিজ্ঞাসা করছি ছেলেটি পালিয়ে গেল বীরেন সমস্ত কার্ড জড়ো করে সায়ক বড়াল নামে একজনের ঠিকানা জেনে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা ভাবে।
কিন্তু যে ঠিকানায় সে কার্ডগুলো পৌঁছে দিতে যায় সেখানে তো শায়ক বড়ালের খোঁজই পাওয়া গেল না, সেখানে থাকেন জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য বলে এক বাঙালি। আদিতে পরিবারের সবাই জ্যোতির্ময় বাবুকে অবিবাহিত শিক্ষিত ব্যক্তি বলেই জানেন যার কাছে দিনে প্রচুর লোক আসে এবং যিনি দিনের ব্যক্তি বেশিরভাগ সময়টাই শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করে খরচ করেন।
এখান থেকেই গল্পের সূচনা, আরেকটু এগুলো দেখা যাবে, এই জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য হচ্ছেন ধর্মান্তরিত মুসলিম , সন্ত্রাস কার্যকলাপে যুক্ত এবং কাশ্মীর হামলায় যার প্রত্যক্ষ হাত আছে। বীরেন দেখা করতে গেলে তিনি বীরেন কে তার পরিবারের ভয় দেখিয়ে শায়ক বড়াল নামে পরিচিতি দিয়ে তাকে বিভিন্ন বিস্ফোরণের এজেন্ট হিসেবে কাজ করাতে চান, এবং বীরেন অরাজি হলে তাকে তার পরিবারের ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করেন। বাড়িতে বীরেন বলে সে ইন্টারভিউ এর ডাকে দুদিন বাইরে যাচ্ছে কিন্তু সে নিজেও জানে না সে কবে বাড়িতে বেঁচে ফিরতে পারবে।
হলো তো বীরেন বাধ্য হয়ে তার কথা মতো কখনো মুম্বাই কখনো কাশ্মীর কখনো দিল্লী ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গায় এজেন্টের কাজ করে, কোথায় কি হচ্ছে সে নিজেও বুঝতে পারে না এবং নিজের অজান্তেই সে দু একটা জায়গায় বোম ব্লাস্টিং করায় । সারাদেশে জ্যোতির্ময় এর বিভিন্ন রকম দেশবিরোধী এজেন্ট ঠিক করা আছে।
গল্পের মাঝে জ্যোতির্ময়ের ভাইজি মিলি তার ঘর থেকে আরবি ভাষায় লেখা একটা লিফলেট নিয়ে সন্দেহ করে এবং তার বান্ধবীর মাধ্যমে জানতে পারে এই লিফলেটটা হচ্ছে ভারত বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে কার্যকলাপ, তখন থেকেই মিলির মনে সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে। মিলি বাড়িতে জানাই যে তার জেঠুর আচরণ কিছুদিন ধরেই তার ঠিকঠাক চেনো এবং পরবর্তীতে আবিষ্কৃত হয় জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ছিল হাসান মাকসুদ তার স্ত্রী এর নাম ইয়াসমিন এবং তাদের একটি ছেলেও আছে সাহিল নামে।
এদিকে জ্যোতির্ময়ের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করে আফসানা সইদ নামে পাকিস্তানের এক স্বনামধন্য লেখিকা যার স্বামী ওমর শেখকে ভারত সরকার বন্দী করে রেখেছে।
এই কার্যকলাপ দমন করতে ভারত সরকারের কয়েকজন অফিসার যেমন তুষার রঙ্গনাথন, মাথুর, রেহান খান এরা বদ্ধপরিকর।
এরপর কী হলো ? জ্যোতির্ময় কি বেঁচে থাকবে বীরেন কি বাড়িতে বেঁচে ফিরতে পারবে ? কী হলো আফসানা সইদের ? তা জানতে আপনারা গল্পটি পড়ুন।
তবে গল্পের শেষদিকে সুমন, মির্জা,আফসানা সইদের সংলাপকে দীর্ঘায়িত না করলেই ভালো হতো।
ঠিক তেমনি অনেক পুলিশ অফিসারদের নাম এবং তাদের ভূমিকা মনে রাখতে পাঠককে বেশ বেগ পেতে হয়।
আশাকরি পাঠকের বেশ ভালই লাগবে।
রেটিং: ৩.৯/৫
( ব্যক্তিগত মতামত)