বইঃ অপদেবতা
লেখিকাঃ রুমানা বৈশাখী
প্রকাশকঃ বিদ্যাপ্রকাশ
প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
ঘরানাঃ অলৌকিক/ হরর
পৃষ্ঠাঃ ১৪৪
অপদেবতা বাংলাদেশের লেখিকা রুমানা বৈশাখীর লেখা বই। উপন্যাস এর নাম এক্ষেত্রে চরিত্রনির্ভর। অপদেবতাই এই উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র, শত-সহস্র বছর ধরে অপদেবতা বাস করছে এক প্রত্যন্ত অঞ্চল, কোনো এক দিগন্তবিস্তৃত হাওড় এর পাড়ের এক অঞ্চল জুড়ে। ঘটনার ঘাত-প্রতিঘাতে শেষ অব্দি এক সম্পন্ন পরিবার এর ছাদে যার নিত্য ভোগ এর ব্যাবস্থা। সে ভোগ ও ভয়ানক, আরো ভয়ানক-শীতল-ক্রূর সেই পরিবারের পরিবার এর প্রধান কত্রী আলতাবানু। যার অতীতেও ঘটেগেছে অসম্ভব এক ভয়ানক ঘটনা।
সেই বাড়িতেই আশ্রিতা হয়ে আসে ছাত্রী নুসরত। বলা ভালো কোনো এক পাপের শাস্তি হিসেবে তাকে এনে ফেলা হয় পান্ডববর্জিত বিদ্যুৎবিহীন এই হাওড় এর পারের গ্রামের আলতাবানুর বাড়ি। এই বাড়ি, বাড়ির সদস্যদের কার্যকলাপ আর নুসরাতের ছেড়ে আসা অতীত, আলতাবানুর অতীত, হাওড়ের অতীত এবং বর্তমান সব মিলিয়ে পাকিয়ে ওঠে এক রহস্যময় অতিলৌকিক আখ্যান।
ব্যক্তিগতভাবে আমার মতে এই উপন্যাস অতিপ্রাকৃতিক-মোড়কে ভয়ঙ্কর বাস্তব এক আখ্যান।তথাকথিত কম রূপসী একটি মেয়েকে সমাজে কিভাবে হেনস্থা হতে হয়, কিভাবে প্রতারিত হতে হয় এবং তার জন্য মেয়েটির আপনজনের শীতল ব্যবহার হৃদয়ে কতটা ক্ষরণ ঘটায় তা খুবই বিশ্বাসযোগ্য ভাবে বর্ণিত হয়েছে এখানে। তেমনি অতিপ্রাকৃতিক আবহে এটি একটি প্রেমের উপন্যাস ও বটে। দয়িতার সমস্ত অপূর্ণতা, সমস্ত খামতি মেনে নিয়েও জোর করে তাকে ফিরে যেতে না দেওয়া,নিজে জীবনের সাথে জড়িয়ে নিয়ে তাকে আগলে রাখার গল্পও বলে এই উপন্যাস। আর যেটা না উল্লেখ করলে আসল কথাটাই বলা হয়না। সমস্ত গল্পটা গড়ে উঠেছে পাকে পাকে এক আতঙ্কের আবহে। কি এক ভয়ংকর-ভয়ানক অঘটনের টানে বারে বারে ঘটে গেছে পৈশাচিক ঘটনা, মানুষ হয়ে মনুষ্যত্ব বিসর্জনকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে একাধিকবার। তবে উপন্যাসের শেষ কোনো কালো অন্ধকার হাওড়ের জলে হয়না, বরং এক আলোকিত ভবিষ্যতের দুয়ারে লেখিকা আমাদের পৌঁছে দেন। উপন্যাসটি তথাকথিত হরর জঁর এর হয়েও অনেকটাই আলাদা। সমাজের অনেক অপ্রিয় অথচ বাস্তব সমস্যা উঠে এসেছে, সম্ভব হলে অবশ্যই একবার পড়ে দেখার অনুরোধ করবো।
রিভিউটি লিখেছেনঃ
আপনিও লিখতে পারেন রিভিউ। বিস্তারিত দেখুন এখানে।