কালীগুণীন ত্রাহিমাম
(কালীগুণীন সিরিজের তৃতীয় সংকলন)
লেখক: সৌমিক দে
বিভা পাবলিকেশন
প্রথম প্রকাশ: এপ্রিল ২০২১
এই বইয়ে স্থান পেয়েছে কালীগুণীনের পাঁচটি গল্প।
প্রথম গল্প, কালীগুণীন এবং বাঘের থাবা : (ফ্ল্যাপ)
দেবেন্দ্র জমিদার হলেও হরেক রকম পরীক্ষা নিরীক্ষার পাগলামি রয়েছে তাঁর। একখানা প্রাচীন পুথির সন্ধান পেয়ে দেবেন্দ্র আবিষ্কার করে ফেলল এক রহস্যময় আরক! যে আরকের দুর্নিবার প্রভাবে আমূল পরিবর্তন ঘটে মানব শরীরে। কী সেই পরিবর্তন? হাতকাটা সাধু কেন নিজের পূর্ণশক্তির প্রয়োগ করে ঝাঁপিয়ে পড়ল এই আরকের সন্ধানে?
প্রতিক্রিয়া: (স্পয়লার)// এই গল্পটা কালীগুণীনের জীবনের প্রথম দিকের গল্প বলা চলে। এই সময়কালে কালিগুণীন তখনও তার গুরুর কাছে শিখছেন মাত্র। গল্পটা খুব সাবলীল গতিতে এগিয়ে মাঝপথে হুট করে মনে হলো কিছুটা গতি হারালো। যদিও কালিগুণীন উপস্থিত হবার সাথে সাথেই গল্প আবার গতি ফিরে পায়।
কালীগুণীন এবং রাহুর গ্রাস : (ফ্ল্যাপ)
সুন্দরবনের একখানা অখ্যাত গাঁয়ে খননকার্য চালাতে গিয়ে উঠে এল একখানা আস্ত প্রাসাদ! প্রাসাদ, নাকি পুরাকালের কোনও কারাগার? কে বন্দি ছিল সেই অন্ধকূপে? এরপরেই গ্রামে শুরু হয় পরপর ভয়ানক নরমেধের পালা...
প্রতিক্রিয়া: আগে ফ্ল্যাপ পড়ে নেয়া হয়নি বলে, রাহুর উৎপত্তি কীভাবে হলো,এটা অনেক চিন্তা করেও বের করা যাচ্ছিল না। কালিগুণীন বনাম রাহুর লড়াইটা তবে হয়েছে জমজমাট।
আপাই—নরমেধে আহতি আবার: (ফ্ল্যাপ)
ডাকিনীর বিল গ্রামে হানা দিল এক অতি ভয়ঙ্কর বিপদ! তীক্ষ্ণ, ক্ষুরধার মেধার এই নৃশংস হত্যাকারী সহস্র রকমের ভেক ধরে, ছলে ভুলিয়ে হত্যা করে গাঁয়ের লোকেদের। এক অসামান্য প্রাচীন বিদ্যা, যা আমূল বদলে দিতে পারে পৃথিবীকে। কালীপদ মুখুজ্জে কি পারল দ্বিতীয়বার সেই আপাইয়ের মোকাবেলা করে এই নরমেধকে বন্ধ করতে?
প্রতিক্রিয়া: এই গল্পের আপাই তার কূটচালে কালিগুণীনকে পর্যন্ত নাকানি চুবানি খাওয়ানোর মতন অবস্থা করেছিলো। এই সংকলনের সবথেকে চতুর প্রতিপক্ষ মনে হয় এই আপাই-ই।আর প্রাচীন যে বিদ্যা,সেটা আসলেই মাথা বা দিক ঘুরিয়ে দেবার মতনই। এই গল্পে একটা প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়নি। বরং কালিগুণীনও জানে না বলে,দায় সারা হয়েছে।
কালীগুণীন এবং বাঘামুড়ার আতঙ্ক: (ফ্ল্যাপ)
বাঘের হাতে মানুষের মাথা আর ধড় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সেই দেহে জন্ম নেয় কারা? আরম্ভ হল সাতখানা গাঁ জুড়ে এক নৃশংস নরবাঘের তান্ডব! সে ছলে বলে কৌশলে আরম্ভ করল নৃশংস নরহত্যা। কালীগুণীন কীভাবে লড়বে এই মানুষ আর বাঘ-মানুষের মধ্যেকার অসম যুদ্ধ?
প্রতিক্রিয়া: পূর্বের গল্পটা পড়ার পর,এই গল্পটা একটু বেশিই সরল লেগেছে। মনে হয়েছে,আগের গল্পের কূটচালের তুলনায় তেমন কিছু নেই।
কালীগুণীন এবং ছিন্নমস্তার পুথি: (ফ্ল্যাপ)
গণপতি কবিরাজ সুদূর পর্বতের কোনও এক গাঁ-এ সন্ধান পায় এক মহা আশ্চর্য বিদ্যার, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভিত নড়িয়ে দিতে সক্ষম! কী সেই বিদ্যা? সেই সাত রাজার ধন পুথিকে হস্তগত করতে আক্রমণ করল এক নরপিশাচ। কালীগুণীন কি পারবে সেই অসম্ভব ধূর্ত নররাক্ষসকে নিজের কূটনৈতিক বুদ্ধি দ্বারা পরাস্ত করতে?
প্রতিক্রিয়া: যদিও এই গল্পটার শেষটা একটু চিন্তা করলেই অনুমান করা যায়,তাও বলা চলে,পুরো গল্পটা খুব সুন্দর বুনোটে রচিত। আর কাব্যের সাথে চিকিৎসাবিদ্যার যে মিলন,সেটাও অনেক সুন্দর। এই সংকলনে কালিগুণীনের পূর্বের অভিজ্ঞতাগুলোর কথা মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে,যেটা ভালো লেগেছে।
পরিশেষে একটা কথা,"ব্রাক্ষণ। নাম কালীপদ। মুখুজ্জে। নিবাস রায়দীঘড়া" এটুকু শোনার(পড়ার) পর প্রথম প্রথম একটা স্বস্তি এলেও প্রত্যেক কাহিনী পরপর পড়লে একটু বাহুল্য লাগে। কালিগুণীনের আগের গল্পগুলো পড়া হয়ে থাকলে এই সংকলনটা না পড়া ঠিক হবে না। কালিগুণীনের প্রখর বুদ্ধিমত্তার ছাপ রয়েছে প্রতিটি গল্পে।
রিভিউটি লিখেছেনঃ Uchchash
আপনিও লিখতে পারেন রিভিউ। বিস্তারিত দেখুন এখানে।