উপন্যাস - পাল্টা হাওয়া
লেখক - স্মরঞ্জিৎ চক্রবর্তী
শহর কলকাতার এক ঝাঁক তরুণ-তরুণীর জীবনের গল্প এই উপন্যাস। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার রীপ, তিথি, মন থেকে সমাজসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চাওয়া মৌনিকা, পশুপ্রেমী আয়ান, ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বিদেশযাত্রার অপেক্ষায় থাকা শাক্য, রীপের বাড়ির চাকর বাটু, চিত্রশিল্পী রাই এবং আরও অনেক চরিত্র ও তাদের সাথেই জড়িয়ে থাকা সম্পর্কগুলোর বিন্যাস এই উপন্যাস।
মূলত দক্ষিণ কলকাতার পটভূমিতে লেখা এই উপন্যাসে ফুটে উঠেছে সেই অঞ্চলের অলি গলি। সকালের রবীন্দ্র সরোবর থেকে বিকেলে পাড়ার রোলের দোকানে আড্ডা - পাতায় পাতায় নকশা এঁকেছে।
রীপ আর মৌনিকার সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে ঢুকতে চায় স্বার্থপর তিথি, মৌনিকা তার কাজের মধ্যেই ভালোলাগা খুঁজে নেয়। আকাশে এরোপ্লেনের ঝলক দেখে বাটু পায় বেঁচে থাকার আশ্বাস, আবার তখনই অ্যাথলিট পুষ্পল মাথায় অজস্র দায়িত্ব আর চিন্তা নিয়ে আরেকবার হেরে যায় তার জীবনের রেসে। মা-বাবার সম্পর্কের টানাপোড়েনে জীবনকে ভালোবাসতে ভুলে যায় পুলু, তার পাশে থাকে অহনা, একরাশ প্রত্যাশাহীন ভালোবাসা নিয়ে। অফিস কেরানীর মেধাবী সন্তান হোক বা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির ম্যানেজার, সফটওয়্যার ফার্মের লোকেশন হেড হোক বা সুদূর গ্রামের সেলাই করে পেট চালানো মেয়ে, রাস্তায় ধূপ বিক্রি করা বয়স্কা মহিলা থেকে শুরু করে বনেদী বাড়ির আদরের ছেলে - জীবনের জালে আবদ্ধ একদন মানুষের রোজনামচা তুলে ধরেছেন লেখক অত্যন্ত সুদক্ষ হাত এ। প্রচুর চরিত্রের ভিড় এও গল্পের খেই হারিয়ে যায়না একবারও। এখানেই লেখকের মুন্সিয়ানা।
সব মিলিয়ে এক বছরের কিছু বেশি সময়ের ছবি ফুটে উঠেছে উপন্যাসে, সময়ের সাথে পাল্টেছে হাওয়া। যে যার মতো করে পুরোনোকে পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াতে চায়, খুঁজে নিতে চায় জীবনের মানে। এই উপন্যাস হতাশার মধ্যেও জীবনের জয়গান।
রিভিউটি লিখেছেনঃ sampad das
আপনিও লিখতে পারেন রিভিউ। বিস্তারিত দেখুন এখানে।