সাধনা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মানুষের সমস্ত মহা বাণীর বিচার আক্ষরিকভাবে না করে মর্মার্থ দিয়ে করা প্রয়োজন। ইতিহাস বলছে এই মর্ম জীবনের ক্রমোন্নতি সঙ্গে নিজেকে প্রকাশ করে। মহান হৃদয় ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা থেকে উদ্ভূত বাণীর অর্থ কোন সাধারণ ব্যাখ্যায় সহজে বলা যায় না। তার ব্যক্তিগত জীবনের ব্যাখায় তারা অন্য কিছুর রহস্য যুক্ত করে। ভারতীয় দর্শন বিশেষত উপনিষদ চর্চার প্রচুর সুযোগ পেয়েছেন পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতন বিদগ্ধ মানুষের সহচর্যে এবং পুত্র তথা লেখক যদি হোন একজন দার্শনিক ও বিশ্ব বিখ্যাত কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর মতন কোন মানুষ তাহলে তার ভাষ্য -ভাবনা-- চিন্তা পূর্ণমাত্রা পায়।
১৯১২ সালে আমেরিকা ভ্রমন কালে ইলিনয় university তে থাকাকালীন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি প্রথম ভারতীয় দর্শনের উপর বক্তৃতা দেন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিটারিয়ান চার্চের ফাদারের অনুরোধে এবং এই বক্তিতা বহুল প্রশংসিত হওয়ায় পরপর হার্ভড , শিকাগো, মিশিগান বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভারতীয় দর্শনের উপরে বক্তৃতার ডাক এল তার কাছে। এর আগে বিভিন্ন ভারতীয় বুদ্ধিজীবী যেমন প্রতাপচন্দ্র মজুমদারের হাত ধরে এবং পরবর্তীকালে ১৮৯৩ সালে পার্লামেন্ট অফ রিলিজিয়নে স্বামী বিবেকানন্দের যুগান্তকারী ভাষণ আমেরিকায় ভারতীয় দর্শনের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে তুলেছিল এবং রবীন্দ্রনাথের দার্শনিক চিন্তাধারা এবং ভাব ধারা তাকে "রিলিজিয়াস জিনিয়াস অফ রেয়ার পাওয়ার" বলে অভিহিত করল।
The problem of Self, Realisation of love, Realisation of Beauty, Realisation of Action.... প্রবন্ধগুলো নৈতিক স্তর থেকে আধ্যাত্মিকতায় উন্নতি করনের এক সাধকের উপলব্ধি।
১৯১৩ সালে লন্ডন থেকে বইটি ইংরেজিতে প্রথম প্রকাশিত হয় গীতাঞ্জলির মতোই এই বইও রবীন্দ্রনাথের নিজের সাধনার ফসল। কবির দার্শনিক সত্তার পূর্ণ বিকাশ ঘটেছে তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি এই সাধনার বক্তৃতামালাতে।
রিভিউটি লিখেছেনঃ
আপনিও লিখতে পারেন রিভিউ। বিস্তারিত দেখুন এখানে।