Get PDF go here PDF Books Contact Us

একটি শাড়ি এবং কামরাঙা বোমা ও অন্যান্য ওবায়েদ হক Ekti Shari Ebong Kamranga Boma O Anyanno by Obayed Haq

একটি শাড়ি এবং কামরাঙা বোমা ও অন্যান্য ওবায়েদ হক Ekti Shari Ebong Kamranga Boma O Anyanno by Obayed Haq
boibd
একটি শাড়ি এবং কামরাঙা বোমা ও অন্যান্য
ওবায়েদ হক
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৪৩ টি
মূল্য : ২৫০ টাকা
ভূমি প্রকাশ প্রকাশনী

শেষ করলাম ওবায়েদ হকের একটি শাড়ি এবং কামরাঙা বোমা ও অন্যান্য। বই টি ১৬ টি গল্পের সংকলন।

প্রায়শ্চিত্ত : কামরুল সাহেব সারারার চেষ্টা করেও তার সুইসাইড নোটটি গুছিয়ে লিখতে পারছেন না, স্কুলে "বাবার কাছে টাকা চেয়ে চিঠি লেখা"  শিখেছিলেন, কিন্তু সুইসাইড নোট লেখা শেখা হয় নি তার কখনো। অতীতের হারানো সুখ খুঁজতে গিয়ে একরাশ দুঃখ আর ঘৃণা কিনে ফেলেছেন তিনি, শুধু প্রায়শ্চিত্ত করতে বাকি...

একটি শাড়ি এবং কামরাঙা বোমা :  গাছের কোটরে বসে দশ বছরের জয়নাল অপেক্ষা করে তার বাবা মায়ের ফিরে আসার। সে বোঝে পাঞ্জাবীরা হয়ত একটু পরেই তাদের ঘর জ্বালিয়ে দেবে, পালানোর আগে মাকে এনে দেওয়া নতুন শাড়ি টুকু জড়িয়ে বেরিয়ে যায় সে....

ছোঁয়া : সহায় সম্বলহীন বৃদ্ধা মালতি দাস সপ্তাহে ছয়দিন ভিক্ষা করে আর একদিন তার ছুটি, সেদিন সে যায় তার নতুন শিক্ষক ক্লাস ফাইভ পড়া নিখিলের কাছে বর্ণ চিনতে। স্মৃতি স্তম্ভের কালো কুচকুচে অক্ষর গুলোতে সন্তানের নাম পড়ে বাঁধ ভেঙে যায় তার বেয়াল্লিশ বছরের জমিয়ে রাখা কান্নার, আজ দুঃখে না, তার মানিক কে ছোঁয়ার আনন্দে কাঁদবে সে।

উপহার : মা ডাক শোনার জন্য দীর্ঘ পনেরো বছর অপেক্ষা করেছেন সেলিনা বেগম তার বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন আলালের কাছ থেকে। একদিন ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে কালাম মিয়া ও সেলিনা বেগমের সংসার, আগত জন্মদিনে আলাল কে " মা " উপহার দিয়ে যায় কালাম মিয়া।

সুখের মনি : অসম্ভব ক্লান্ত হয়ে বাড়ি এসে নুরুল হক দেখে হারিকেনের কাঁপা কাঁপা আলোয় তার ক্লাস ফোর পর্যন্ত পড়া বৌ তার ছেলের শিক্ষিকা হয়ে উঠেছে। হলুদাভ আলোয় ছাত্র শিক্ষিকার উদ্ভাসিত মুখ দেখে তার চোখ গুলো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, সে বোঝে সাপের মনির দরকার তার নেই, তার কাছে সুখের মনি আছে।

ভুল সাক্ষাৎ : সেই যেবার প্রথম ধর্ষিতা হলো মনোয়ারা, আর কোনোদিন সে কারো বৌ হওয়ার স্বপ্ন দেখেনি, কোনো সুখের স্বপ্ন তাকে বিভোর করতে পারে নি। সুখ একবার এসেছিলো অবশ্য খসে পড়া তারার মতো, গভীর রাতে প্রচন্ড মায়ায় নিজের পেটে হাত বুলিয়ে দিতো সে। ঠিক করে রেখেছিলো একদিন বাবুইর সামনে গিয়ে তাকে দুহাতে জড়িয়ে ধরবে, একবার বাবুই বলে ডাকবে শুধু। হয়েওছিলো সে সুযোগ, তবে ভুল সময়ে ভুল জায়গায়...

অধর্ম : বয়স বাড়ার সাথে সাথে সম্মান এর কাঙাল হয়েও মোতালেব মিয়া নিজের স্বভাবের জন্য তা পেয়ে না উঠছিলেন না। তাই তিনি ছেলের বিয়ে দেবেন। কিন্তু মেয়ে দেখতে এসেই সব তালগোল পেকে গেলো, ধর্ম অধর্মের মাঝে নিজের কর্মের বেড়াজালে জড়িয়ে গেলেন তিনি....

হয়তো : ভুত ভগবানে অবিশ্বাসী লেখক মাঝি গণেশের কাছে তাদের গ্রামের কৃষ্ণচূড়া গাছের অমাবস্যা তে আর্তনাদের কথা শুনে রোখ চেপে যায়। যুক্তিবাদী মন আর অতিপ্রাকৃত গল্পের তাড়নায় হরিপুর রওনা দেয় সে। তারপর....

অসুখ : প্রাণ খুলে হাসতে থাকা কোনো মানুষ কে সহ্য করতে পারে না লোপা। পক্ষঘাতগ্রস্ত স্বামীর সাথে সেও দিনকে দিন জড়ো বস্তুতে পরিণত হতে থাকে। একদিন বিধবা রত্না আপার নিজের মতো বেঁচে থাকার আনন্দ তার বুকের লালিত স্বপ্ন গুলোকে প্রশ্রয় দেয়, অসুস্থ খালেদ এর গলায় ঢালতে থাকা ওষুধের শিশি কে আর তুলে নেই না সে.....

আংটি :  মামাবাড়ি তে গিয়ে বিয়ে হয়ে যায় ১২ বছরের রুমালির, বাসর রাতে বোকাসোকা চশমা পরা লোকটি একটি সোনার আংটি পরিয়ে দেয় ওর অনামিকায়।
মোহন জানে না তার স্ত্রী রুমালির আগের বিয়ের কথা। তার অফিসের ধার দেনা মেটাতে সে ঢাল করে রুমালির বাপের বাড়ি থেকে আনা অনামিকার আংটি টিকে। সোনার দোকানে সেটি বিক্রী করতে গিয়ে রুমালি বোঝে অবুঝ প্রেমিকের মতো আঁকড়ে ধরছে সেই আংটি, মিশে যায় সে লাল নীল দুনিয়ার হাতছানিতে..

ফ্যাকাশে লাল ফুল : কুসুমের বয়স গত বর্ষায় আট হয়েছে। লাল রঙের একটা কুচি দেওয়া হাফ প্যান্ট ওর সম্বল। তারপর একদিন বুঝতে পারে অভিশাপের মতো কি যেন গুটলি বাঁধছে তার বুকে। নিজেকে ঢাকতে দূর্গা মায়ের শাড়ি ছিনিয়ে আনতে জলে নামে সে।

রমজান : ঘৃণার পুঁজি নিয়ে রমজান কালু আর লালু কে সাথে নিয়ে মিশে যায় বুভুক্ষ দের দলে। সেখানে পঙ্গু শরীফুদ্দিন কে দেখে সে তার পায়ের দিকে তাকিয়ে ভাবে একটি না থাকলে তার কি এমন ক্ষতি হতো? ক্ষতি হয়ও নি, শুধু লালু আর কালু গভীর রাতে কেঁদে উঠে সবাই কে জানাতে চায় কি যেন হারিয়ে গেছে তাদের...

চশমা : দশ বছর পরে হটাৎ একদিন কথক তার প্রেয়সীর থেকে পর্যাপ্ত জায়গা রেখে বসে বুঝতে পারে হিমালয় পাড়ি দেওয়া সম্ভব কিন্তু ওই দেড় ফুট দূরত্ব পার করা সম্ভব না তার পক্ষে....

নিমকহারাম :  হাড্ডির দোকান সর্বস্য কালা ধলা গরু দুটিই নসিব মিয়ার ভরসা।ওদের উপর জুলুম করেই শান্তি পায় সে।আর বাড়তি আয় বলতে ওই রাতের এক আধ মহিলা যাত্রীকে ডাকাতের দলের হাতে তুলে দিয়ে যা পাওয়া যায় আর কি।
এরপর একদিন অসুস্থ্য ছেলে কে নিয়ে সদরে ছোটে সে, কিন্তু হটাৎ রাস্তায় কালা ধলা বেঈমানি শুরু করে,নসিব বোঝে এখন ওদের বেঁচে থাকা টা মুখ্য হয়ে উঠেছে।বুড়ো দাঁড়াকাক মরেনি : কথক পাঁড় মধ্যবিত্ত হিসেবে মানুষ, অভিশাপ বলতে ওই মায়াবী একটা চেহেরা।একদিন অফিসে যাওয়ার সময় তার রাস্তায় আপদ হয়ে আসে ছোটবেলার বেলি পাগলী যে কিনা নতুন শাড়ি দিলে সব খুলে সামনেই শাড়ি পরে দেখাতো।
বাড়ি আসার সময় সে আবার শাড়ি কিনে আনে, তবে এবার বেলি কে ঢাকতে এই শাড়ি কিনে আনে সে, কিন্তু এসে আর তাকে খুঁজে পায়না।
শুধু একটা বুড়ো দাঁড়াকাক বুকের মাঝে আবেগ নিয়ে কা কা করতে থাকে....

বিসর্জন :  একটা পোয়াতি ছাগল আর নিত্য সঙ্গী হাঁপানি ছাড়া সবাই ত্যাগ করছে লক্ষণ কে। মিলিটারি আক্রমন থেকে বাঁচতে রাস্তায় চলতে চলতে জ্ঞান হারায় সে।
এক দল মানুষের মধ্যে ছোট দূর্গা ওকে সাহায্যে করতে থেকে যায়। দূর্গা দশমীর দিন মিলিটারির থেকে বাঁচতে এই দূর্গা কেই বিসর্জন দেয় সে। শুধু ছাগল টার জন্য একটু কষ্ট হয় বৈকি।

নিজস্ব মন্তব্য :
রেটিং ৫/৫
লেখনী অসাধারণ। খুব ঝরঝরে লেখা। বানান ভুল খুব কম চোখে পড়েছে। পরস্পর পড়ার ফলে মন খারাপ হচ্ছিলো। নামকরণ ও যথার্থ। এতো টা বড়ো রিভিউ পড়ার জন্য ধন্যবাদ...


রিভিউটি লিখেছেনঃ 
আপনিও লিখতে পারেন রিভিউ। বিস্তারিত দেখুন এখানে

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.

Popular Writers

Updates

{getWidget} $results={4} $label={recent} $type={list2}