Get PDF go here PDF Books Contact Us

থ্রিলার সপ্তক - সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ Thriller Soptok by Syed Mustafa Siraj

থ্রিলার সপ্তক - সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ Thriller Soptok by Syed Mustafa Siraj
boibd
বই- থ্রিলার সপ্তক
লেখক- সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ


লেখকের নাম চেনা হলে বইটা হাতে নেওয়ার সময়ই একটা প্রত্যাশা তৈরী হয়ে যায়। "থ্রিলার সপ্তক" হাতে নেওয়ার সময় আমার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। সাতটি উপন্যাস রয়েছে বইটিতে, এক এক করে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছি।

১. তদন্ত- নাম শুনে কেন জানি না মনে হয়েছিল পুলিশ কাহিনী হবে, হয়ত ইন্সপেক্টর ব্রহ্মকেও পেলে পেতে পারি। তারপর শুরুর কয়েক পাতা পড়েই বুঝলাম, আর যাই হোক এটা পুলিশ কাহিনী নয়। কিন্তু রহস্যের মধ্য দিয়ে গল্প বেশ তরতর করে এগোচ্ছিল, আমিও মাথা খাটাচ্ছিলাম- কে হতে পারে আসল অপরাধী! তারপর দুম করে হঠাৎ দেখলাম গল্পটা শেষ হয়ে গেছে। আজ্ঞে হ্যাঁ, গল্প শেষ। ক্লাইম্যাক্সের নামে বিচ্ছিরি রকমের ব্যর্থ একটা টুইস্ট আনার চেষ্টা করা হয়েছে যদিও কিন্তু ওই জায়গাতেই গল্পটা পুরো খেলো হয়ে গিয়েছে। ওই টুইস্টকে মেনে নিলে সমগ্র গল্পটির মধ্যে অজস্র খুঁত খুঁজে পাওয়া যাবে।  শেষ দেখে বলতেই হয় একদম বাজে গল্প। 
রেটিং- ০৩/১০ (শুধুমাত্র থ্রিল আর ভাষাগত উপস্থাপনার জন্য)


২. নৃশংস - আগের গল্পের চরম হতাশা থেকে পড়তে শুরু করলাম। খুঁজছি, থ্রিল কোথায়!!! ... থ্রিল কোথায়!!! গল্পটা শেষ হয়ে গেল। এত বড় উপন্যাস আমি মাত্র এক ঘন্টায় শেষ করে ফেললাম, তবুও জিজ্ঞেস করছি থ্রিল কোথায়! অনুভব করলাম রোমাঞ্চ শব্দটাকে আমি বড় সংকীর্ণ অর্থে দেখি। রোমাঞ্চ মানে তো শুধুমাত্র রহস্যের মোড়কে আসা রোমাঞ্চ নয়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের রোজনামচার মধ্যেও তো আমরা রোমাঞ্চ অনুভব করতে পারি। উপন্যাসটি শেষ করার পর উপলব্ধি করলাম এতক্ষণ ধরে কী পড়েছি। কী মারাত্মক একটা লেখা পড়লাম। একটা নৃশংস বর্বর খুনিকেও যে ভালোবেসে ফেলা যায় তা এই উপন্যাসটা না পড়লে বোধ করি অনুভব করতে পারতাম না। কিছুদিন আগে অজেয় রায়ের "ডাক্তার কুঠি" পড়েছি, সেখানে বলা রয়েছে- একটা মানুষ নিজে নিজে অপরাধী হয় না, তার অপরাধী হওয়ার পেছনে তার জিন এবং পরিবেশ কাজ করে। এই কথাটাই "নৃশংস"- এর মূল উপজীব্য। সাধুর জীবনের মধ্যে দিয়ে লেখক দেখিয়েছেন একটা ছেলের অপরাধী হয়ে ওঠার গল্প।  সাধু অত্যন্ত নৃশংস, বাস্তব জীবনে এমন লোককে পেলে ফাঁসিতে চড়াতে ইচ্ছে করবে। কিন্তু উপন্যাসে সাধু যখন চিৎকার করে জিজ্ঞেস করবে - "আমার ফাঁসি হবে না?" বুকটা তখন মোচড় দিয়ে উঠবে, বলতে ইচ্ছে করবে- সাধু তুই পালা...
শেষ লাইনে এসে সাধুর কাতর আবেদন, "ঝুমুরকে বলবেন সাধু কথা রেখেছিল।" মাথার ভেতরটা ঝিমঝিম করে তুলবে, চোখে জল আসবে না কিন্তু বুকের ভেতর একটা হাহাকার হবে- শেষমেশ সাধুর তবে আর সাধু জীবনযাপন করা হল না!
জানি না, রিভিউ লিখতে গিয়ে স্পয়লার দিচ্ছি কিনা। কিন্তু বিশ্বাস করুন, স্পয়লার কেন, কাহিনীখানাও সংক্ষেপে যদি বলে দিই তবুও কিচ্ছু যাবে আসবে না কারণ "নৃশংস" শোনার গল্প নয়, অনুভব করার গল্প। পড়ার পর দুই দিন আর অন্য লেখা পড়তে পারিনি। মাথার মধ্যে শুধু সাধুর কথাই ঘুরেছে। 
আমার কাছে এই গল্প ১০/১০।

৩. না- নিষাদ -  থ্রিলার খুঁজছিলাম। পেলাম থ্রিলার। রহস্য, পুলিশের তাড়া, রোমাঞ্চ- সব মিলিয়ে থ্রিলার যেমন হয় আরকি। কিন্তু থ্রিলারের নাম "না- নিষাদ"? একটু কেমন কেমন লাগছে না? লাগছে কারণ এই থ্রিলার তো শুধু থ্রিলার নয়। পুলিশ নায়ক আর মানুষ নায়ক এখানে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। নায়কের মনের অলিগলি- দ্বিধাদ্বন্দ্ব, আবেগসহ- সবকিছু লেখক উন্মুক্ত করে দিয়েছেন আমাদের সামনে। নায়কের সঙ্গে তাই আমরা কখনও কর্তব্যবোধের তাড়নায় ছুটে যাই, কখনও আবার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে ভুগি। "সাইকো" না থেকেও যে "সাইকোলজিক্যাল" থ্রিলার হতে পারে, এই গল্পটি তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। শেষের টুইস্টখানা খানিক অপ্রত্যাশিত ছিল, তাই বুকে মোচড় দিয়ে গেল। 
রেটিং- ০৮/১০

৪. ওয়াগন ব্রেকার - এই উপন্যাসটা পড়ে নিশ্চিত হয়ে গেলাম লেখক এই বইতে থ্রিলারের চিরাচরিত ধারণাকে ভেঙে ফেলার পণ করেছিলেন। তিনটি চরিত্রকে ঘিরে আবর্তিত হওয়া সামাজিক গল্প, তবুও রোমাঞ্চ অনুভূত হয়, বারবার মনে হয় শেষমেশ কী হবে তাহলে! রোমাঞ্চের পাশাপাশি লেখক মানুষের মনস্তাত্ত্বিক দিকটিও তুলে ধরেছেন গল্পে। ভীরু হওয়ার অনুশোচনা, বেকারত্বের জ্বালা, বয়স বেড়ে যাওয়ার সত্ত্বেও সঙ্গীহীনতার নিঃশব্দ হাহাকার... সব কিছু মিলিয়ে ওয়াগন ব্রেকার এক সুন্দর উপন্যাস। 
রেটিং- ৮/১০


৫. পেছনের আততায়ী- এটাও একটা মনস্তাত্ত্বিক গল্প। মানুষের মনের গহীনে যা ঘটে চলে সেই নিয়েই গল্প এগিয়েছে, রহস্যও ছিল একটা কিন্তু রোমাঞ্চ তেমনভাবে টের পেলাম না। তাছাড়া আগের গল্পগুলোতে যেমন চরিত্রগুলোর প্রতি ভালোবাসা তৈরী হয়, এখানে সেই জায়গা নেই। অনেক চরিত্র আর পারিপার্শ্বিকের বর্ণনাতে একেকটা চরিত্রের প্রতি টান তৈরী হওয়ার জায়গা রাখেননি লেখক। খারাপ বলব না কিন্তু হঠাৎ করেই যেন শেষ হয়ে গেল আর শেষ হওয়ার পরেও কোনো ছাপ পড়ল না। সব মিলিয়ে মোটামুটি লাগল।
রেটিং - ০৬/১০


রিভিউটি লিখেছেনঃ 
আপনিও লিখতে পারেন রিভিউ। বিস্তারিত দেখুন এখানে

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.

Popular Writers

Updates

{getWidget} $results={4} $label={recent} $type={list2}