বই: দ্য থিফ
লেখক: ফুমিনরি নাকামুরা
অনুবাদক: ইরাজ উদ্দৌলা দিবাকর
জনরা: ফিলোসফিক্যাল ক্রাইম থ্রিলার
আলো ঝলমলে এক শহর টোকিও। কিন্তু এই আলোর আশেপাশেই রয়েছে জমাট বদ্ধ অন্ধকার। আর এই ঘুটঘুটে অন্ধকারে বিচরণ করে ভাগ্যের কাছে হেরে যাওয়া মানুষরা বা অন্যের ভাগ্য নিয়ে খেলা করা মহাজনরা। তেমনি একজন নিশিমুরা, ভাগ্যের কাছে বারংবার পরাজিত হওয়া এক দক্ষ পকেটমার। টোকিওর ব্যস্ত শহরে চোখের পলকেই উঠিয়ে নেয় অন্যের ম্যানিব্যাগ বা অন্যকিছু। অনেকসময় তো নিজেই বুঝে না কখন অন্যের জিনিস চলে আসে তার পকেটে! জীবনের প্রিয় দুজনকে হারিয়ে যখন জীবন-মৃত্যুর দোটানায় তখন হঠাৎ পরিচয় হয় অজ্ঞাত মা-ছেলের সাথে। ছোট ছেলেটার মধ্যে নিজের অতীত দেখতে পায় নিশিমুরা। বেঁচে থাকার ইচ্ছে যখন মনে আবার জেগে উঠে অতীতের ভয়াবহ স্মৃতি সামনে এসে দাড়ায়! করতে হবে কিছু গুপ্ত কাজ নয়তো মৃত্যু...
মাস্টারমাইন্ড, থ্রিল-টুইস্ট, সাসপেন্স, একশনে ভরপুর হবে ❝দ্য থিফ❞ প্রথমে এমনটাই ভেবেছিলাম। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো এমনটা অনুপস্থিত। আর দশটা সাধারণত পকেটমারের জীবন যেমন হয়ে থাকে নিশিমুরার জবানিতে তেমনটাই দেখানো হয়েছে। তবে লেখকের গল্পবলার ধরন বেশ সহজ। জন্মের পর থেকেই ভাগ্যের সাথে লড়াই করতে থাকে অনেকেই। বেঁচে থাকার সংগ্রামে কেউ বা পা দেয় অন্ধকার জগতে। আর সে অন্ধকার জগতের বাসিন্দাদের জীবন কেমন হয়; ফিলসফি, থ্রিল, ক্রাইম, মিস্ট্রির সংমিশ্রণে বইয়ে সেটাই দেখানো হয়েছে। আগেই বলে রাখি মেইন ফোকাস পেয়েছে বইয়ের সাইকোলজিক্যাল ফিলোসোফি।
অতীত স্মৃতিচারণের সাথে বইয়ের কাহিনী এগিয়ে যায়। বন্ধু ইশিকাওয়া ও প্রেমিকা সায়েকোর কথা ভেবে যখন সময় পার হচ্ছিল তখন মার্কেটে ছোট একটা ছেলের দক্ষতার সাথে জিনিস উঠিয়ে নেওয়া দেখে নিজের ফেলে আসা দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায় নিশিমুরার। ছেলেটা যেন তার মতো হয়ে না ওঠে সেদিকেও নজর দেয়। হঠাৎ করে বেঁচে থাকার ইচ্ছে জেগে উঠে সাথে আবির্ভাব হয় কিজাকির। নিশিমুরা মেইন ক্যারেক্টার হলেও বইয়ে বেশ কিছু চরিত্র রয়েছে তারমধ্যে ছোট ছেলে আর কিজাকিও ফোকাসে দেখানো হয়েছে। কিজাকির বলা গল্পটা ইন্টারেস্টিং ছিল। গল্পটার জন্যই লাস্টটা প্রেডিক্টেবল। শেষ প্যারায় সমাপ্তি যেভাবে দেখানো হয়েছে, সেরা! তবে বক্সরহস্য রহস্য থেকে গেল।
অনুবাদ সহজ-সাবলীল।
রিভিউটি লিখেছেনঃ
আপনিও লিখতে পারেন রিভিউ। বিস্তারিত দেখুন এখানে।